সংবাদ ভাস্কর ডিজিটাল ডেস্ক : মাধ্যমিকের খাতায় কুকথার বন্যা, মানসিক বিকৃতির বিস্ফোরণ? বিস্ময় ও দুশ্চিন্তা সর্বস্তরে
অতিমারির অবক্ষয়? কিশোর মনের অজানা দুর্বিপাক? অপারগতার অসহায়তা থেকে মানসিক বিকৃতির বিস্ফোরণ? না, অন্য কিছু?মাধ্যমিক পরীক্ষার বেশ কিছু উত্তরপত্রে অকথ্য কটু কথার বন্যা এই সব প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা, চিন্তক, এমনকি মনোবিদদেরও।
চিন্তাবিদ-মনোবিদদের বক্তব্য, এর উত্তর সহজ নয়। অথচ উত্তর পেতেই হবে এই প্রজন্মের মনের সামগ্রিক শুশ্রূষার তাগিদে। অন্যথায় সমাজের সমূহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা। সর্বস্তরে পরিব্যাপ্ত এই দুশ্চিন্তার কারণ কিছু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র।
তাদের কেউ কেউ খাতায় উত্তর লেখার পরে অবশিষ্ট পাতা ভরে দিয়েছে গালিগালাজে। কেউ কেউ আবার উত্তর সে-ভাবে লিখতেই পারেনি। আর তা না-পেরে সাদা পাতায় অশ্রাব্য ভাষায় যাবতীয় ক্রোধ উগরে দিয়েছে যেন। পরীক্ষকেরা জানাচ্ছেন, কোনও বিশেষ ব্যক্তি বা সমাজের উদ্দেশে নয়, অনেকটা অপ্রাসঙ্গিক, উদ্দেশ্যহীন ভাবেই কিছু পরীক্ষার্থী খাতায় কুকথা লিখেছে। কেউ আবার এমন কিছু অপ্রাসঙ্গিক শব্দ লিখেছে, যার কোনও অর্থ উদ্ধার করতে পারেননি শিক্ষকেরা।
দীর্ঘ কালের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থেকে অনেক শিক্ষক জানাচ্ছেন, এত দিন পরীক্ষার খাতায় আকবরের শাসন ব্যবস্থা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে আকবর-বীরবলের কাল্পনিক কথালাপের যথেচ্ছ উদ্গার অথবা গরুর রচনায় বিচিত্র মৌলিকতার উদ্ভাস দেখা গিয়েছে। উত্তর লিখতে না-পেরে পাশ করিয়ে দেওয়ার অনুনয়, এমনকি দু’দশ টাকার নোট সেঁটে দেওয়ার উদাহরণও বিরল নয়। কেউ কেউ খাতায় নৌকার ছবি এঁকে পরীক্ষককে লিখেছে, ‘এ বারের মতো পার করিয়ে দিন। নৌকা উল্টে গেলে ডুবে যাব।’
কিন্তু উত্তরপত্রে অকথা-কুকথার এমন প্রকাশ অবিশ্বাস্য! তাই শিক্ষককুলের চিন্তার শেষ নেই। অনেকের বক্তব্য, গত দু’বছরে করোনার প্রকোপ শুধু দেহে নয়, মনেও গভীর ক্ষত ও ক্ষতি দেগে দিয়েছে। বিশেষত পঠনপাঠন প্রচণ্ড মার খাওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের মানসিকতা অনেকাংশে দুমড়েমুচড়ে গিয়েছে। খুব দ্রুত অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছে তারা। যার প্রকাশ পরীক্ষার খাতাতেও ঘটছে বলে মনে করছেন শিক্ষকদের একাংশ। এটা যে কোনও মতেই সমর্থনযোগ্য নয়, তা স্পষ্ট ভাষায় জানাচ্ছেন তাঁরা।
মনোরোগ চিকিৎসক অনিরুদ্ধ দেব বলছেন, ‘‘১৫-১৬ বছরের ছেলেমেয়েদের এই ধরনের কাজের জন্য হয়তো আমরা বড়রাও দায়ী। অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের সামনে কি সব সময় শিক্ষকদের সম্মান দিয়ে কথা বলেন? ছেলেমেয়েদের সামনে অভিভাবকদেরও তো কোনও ব্যক্তিকে গালিগালাজ করার প্রবণতা আগের থেকে বেড়েছে।
অসহিষ্ণু হলেই গালিগালাজ করার প্রবণতা যে বাড়ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা মন্তব্য পড়লেই সেটা বোঝা যায়। সম্ভবত অনেক ছেলেমেয়ে এটা ভেবে থাকতে পারে যে, পরীক্ষার খাতায় এই ধরনের অসম্মানজনক কথা বা গালিগালাজ লেখা যেতেই পারে।’’
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তার কথায়, ‘‘যত পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়, সেই তুলনায় গালিগালাজ লিখে রাখা খাতার সংখ্যা খুবই নগণ্য। হয়তো কোনও শতাংশের হিসেবেও আসবে না। তবু এই প্রবণতাটা ভয়ঙ্কর।’’ ওই কর্তা জানিয়েছেন, মাধ্যমিকের পরীক্ষার খাতায় গালিগালাজ লিখে রাখার দৃষ্টান্ত এই প্রথম পেলেন তাঁরা।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট প্রশান্ত রায় বলেন, ‘‘এর দু’টি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, সার্বিক ভাবে পড়ুয়াদের মূল্যবোধ কমছে। এখন শিক্ষক ও পড়ুয়াদের মধ্যে সম্পর্কেও একটা পরিবর্তন আসছে। ছেলেমেয়েরা দেখছে, তাদের অভিভাবকেরা শিক্ষকদের সঙ্গে ঝগড়াও করছেন।
শিক্ষায় যতই বাণিজ্যকরণ হবে, ততই শিক্ষক-পড়ুয়া সম্পর্ক পাল্টাতে থাকবে। দ্বিতীয়ত, এমনটাও হয়ে থাকতে পারে যে, আগেও এ-রকম লেখা হয়েছে। এখন সেগুলো প্রকাশ্যে এসেছে।’’
মাধ্যমিকের ফল বেরোতে পারে ৩ বা ৪ জুন। পর্ষদ সূত্রের খবর, ফল বেরোনোর আগে ‘রিপোর্ট এগেনস্ট’ বা আরএ কমিটি ওই সব পরীক্ষার্থীর অভিভাবকদের ডেকে পাঠিয়েছে।
তাঁদের ছেলেমেয়েদের গালিগালাজ ভরা খাতাও দেখানো হয়েছে। বেশির ভাগ অভিভাবকই হতবাক! ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন তাঁদের অনেকে।
পর্ষদ সূত্রের খবর, উত্তরপত্র দেখার সময় কোনও খাতায় পরীক্ষকেরা যদি দেখেন, কোনও পরীক্ষার্থী অপ্রাসঙ্গিক কিছু লিখে রেখেছে বা ছবি এঁকেছে, তখন তিনি সেটা প্রধান পরীক্ষককে জানান। প্রধান পরীক্ষক সেই খাতা পাঠান আরএ কমিটির কাছে। সেই কমিটি ওই খাতা দেখে যদি মনে করে, অভিভাবকদের ডেকে দেখানো উচিত, তখন তাঁদের ডাকা হয়।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ ভাবে অভিভাবকদের ডেকে খাতা দেখানোর ঘটনা আগেও ঘটেছে। তবে এ বার পরীক্ষার খাতায় কয়েক জন যে-ভাবে আপত্তিকর শব্দ লিখেছে, তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। ১৫-১৬ বছরের পড়ুয়া এমন অশ্রাব্য গালিগালাজ কোথায় শিখল, সেই প্রশ্নও উঠছে।’’ অভিভাবকদের অনেকেই ছেলেমেয়েদের এমন কীর্তি দেখে ভেঙে পড়েছেন বলে খবর।
এক পর্ষদকর্তা বলেন, ‘‘কোনও পরীক্ষার্থী যদি ভেবে থাকে যে, লক্ষ লক্ষ খাতার মধ্যে তার একটি গালিগালাজ লেখা খাতা পর্ষদের নজরে পড়বে না, সেটা ভুল ভাবনা। খাতায় এই ভাষায় গালিগালাজ লিখে রাখলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর শুধু একটি পরীক্ষা নয়, সব পরীক্ষাই বাতিল হতে পারে। এমনকি এক নয়, একাধিক বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার অনুমতি না-ও মিলতে পারে।’’
শিক্ষা পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, অতিমারি-উত্তর পর্বে উপাচার্যের ঘরে ঢুকে কটু কথা বলা, অনলাইনে ‘ওপেন বুক’ বা বই খুলে পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন এবং উত্তরপত্রে কুকথা লেখা হয়তো পরস্পরবিচ্ছিন্ন প্রবণতা হয়। এই সব কিছুর মূলে একই দুঃসময়ের গরল ক্রিয়াশীল।
চিকিৎসক অনিরুদ্ধবাবুর মতে, আড়াল থেকে এমন অনেক কাজ আমরা করতে পারি, যা হয়তো প্রকাশ্যে কোনও দিনই করতে পারব না। তাঁর কথায়, “ওই ছোট ছোট পরীক্ষার্থীরা হয়তো ভাবছে, তারা আড়াল থেকে এগুলো লিখছে। তাই বেপরোয়া হয়ে যা খুশি লিখছে। কিন্তু ওদের এখনও এটা বোঝার মতো বুদ্ধি হয়নি যে, পরীক্ষার খাতায় কোনও আড়াল নেই।
সেটা জানলে হয়তো খাতায় ওই ভাষা লিখে আসত না।’’
অতিমারির অবক্ষয়? কিশোর মনের অজানা দুর্বিপাক? অপারগতার অসহায়তা থেকে মানসিক বিকৃতির বিস্ফোরণ? না, অন্য কিছু?
মাধ্যমিক পরীক্ষার বেশ কিছু উত্তরপত্রে অকথ্য কটু কথার বন্যা এই সব প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা, চিন্তক, এমনকি মনোবিদদেরও। চিন্তাবিদ-মনোবিদদের বক্তব্য, এর উত্তর সহজ নয়। অথচ উত্তর পেতেই হবে এই প্রজন্মের মনের সামগ্রিক শুশ্রূষার তাগিদে। অন্যথায় সমাজের সমূহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা।
সর্বস্তরে পরিব্যাপ্ত এই দুশ্চিন্তার কারণ কিছু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র। তাদের কেউ কেউ খাতায় উত্তর লেখার পরে অবশিষ্ট পাতা ভরে দিয়েছে গালিগালাজে। কেউ কেউ আবার উত্তর সে-ভাবে লিখতেই পারেনি। আর তা না-পেরে সাদা পাতায় অশ্রাব্য ভাষায় যাবতীয় ক্রোধ উগরে দিয়েছে যেন। পরীক্ষকেরা জানাচ্ছেন, কোনও বিশেষ ব্যক্তি বা সমাজের উদ্দেশে নয়, অনেকটা অপ্রাসঙ্গিক, উদ্দেশ্যহীন ভাবেই কিছু পরীক্ষার্থী খাতায় কুকথা লিখেছে। কেউ আবার এমন কিছু অপ্রাসঙ্গিক শব্দ লিখেছে, যার কোনও অর্থ উদ্ধার করতে পারেননি শিক্ষকেরা।
দীর্ঘ কালের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থেকে অনেক শিক্ষক জানাচ্ছেন, এত দিন পরীক্ষার খাতায় আকবরের শাসন ব্যবস্থা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে আকবর-বীরবলের কাল্পনিক কথালাপের যথেচ্ছ উদ্গার অথবা গরুর রচনায় বিচিত্র মৌলিকতার উদ্ভাস দেখা গিয়েছে। উত্তর লিখতে না-পেরে পাশ করিয়ে দেওয়ার অনুনয়, এমনকি দু’দশ টাকার নোট সেঁটে দেওয়ার উদাহরণও বিরল নয়। কেউ কেউ খাতায় নৌকার ছবি এঁকে পরীক্ষককে লিখেছে, ‘এ বারের মতো পার করিয়ে দিন। নৌকা উল্টে গেলে ডুবে যাব।’ কিন্তু উত্তরপত্রে অকথা-কুকথার এমন প্রকাশ অবিশ্বাস্য! তাই শিক্ষককুলের চিন্তার শেষ নেই।
অনেকের বক্তব্য, গত দু’বছরে করোনার প্রকোপ শুধু দেহে নয়, মনেও গভীর ক্ষত ও ক্ষতি দেগে দিয়েছে। বিশেষত পঠনপাঠন প্রচণ্ড মার খাওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের মানসিকতা অনেকাংশে দুমড়েমুচড়ে গিয়েছে। খুব দ্রুত অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছে তারা। যার প্রকাশ পরীক্ষার খাতাতেও ঘটছে বলে মনে করছেন শিক্ষকদের একাংশ। এটা যে কোনও মতেই সমর্থনযোগ্য নয়, তা স্পষ্ট ভাষায় জানাচ্ছেন তাঁরা।
মনোরোগ চিকিৎসক অনিরুদ্ধ দেব বলছেন, ‘‘১৫-১৬ বছরের ছেলেমেয়েদের এই ধরনের কাজের জন্য হয়তো আমরা বড়রাও দায়ী। অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের সামনে কি সব সময় শিক্ষকদের সম্মান দিয়ে কথা বলেন? ছেলেমেয়েদের সামনে অভিভাবকদেরও তো কোনও ব্যক্তিকে গালিগালাজ করার প্রবণতা আগের থেকে বেড়েছে।
অসহিষ্ণু হলেই গালিগালাজ করার প্রবণতা যে বাড়ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা মন্তব্য পড়লেই সেটা বোঝা যায়। সম্ভবত অনেক ছেলেমেয়ে এটা ভেবে থাকতে পারে যে, পরীক্ষার খাতায় এই ধরনের অসম্মানজনক কথা বা গালিগালাজ লেখা যেতেই পারে।’’
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তার কথায়, ‘‘যত পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়, সেই তুলনায় গালিগালাজ লিখে রাখা খাতার সংখ্যা খুবই নগণ্য। হয়তো কোনও শতাংশের হিসেবেও আসবে না। তবু এই প্রবণতাটা ভয়ঙ্কর।’’ ওই কর্তা জানিয়েছেন, মাধ্যমিকের পরীক্ষার খাতায় গালিগালাজ লিখে রাখার দৃষ্টান্ত এই প্রথম পেলেন তাঁরা।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট প্রশান্ত রায় বলেন, ‘‘এর দু’টি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, সার্বিক ভাবে পড়ুয়াদের মূল্যবোধ কমছে। এখন শিক্ষক ও পড়ুয়াদের মধ্যে সম্পর্কেও একটা পরিবর্তন আসছে। ছেলেমেয়েরা দেখছে, তাদের অভিভাবকেরা শিক্ষকদের সঙ্গে ঝগড়াও করছেন। শিক্ষায় যতই বাণিজ্যকরণ হবে, ততই শিক্ষক-পড়ুয়া সম্পর্ক পাল্টাতে থাকবে। দ্বিতীয়ত, এমনটাও হয়ে থাকতে পারে যে, আগেও এ-রকম লেখা হয়েছে। এখন সেগুলো প্রকাশ্যে এসেছে।’’
মাধ্যমিকের ফল বেরোতে পারে ৩ বা ৪ জুন। পর্ষদ সূত্রের খবর, ফল বেরোনোর আগে ‘রিপোর্ট এগেনস্ট’ বা আরএ কমিটি ওই সব পরীক্ষার্থীর অভিভাবকদের ডেকে পাঠিয়েছে। তাঁদের ছেলেমেয়েদের গালিগালাজ ভরা খাতাও দেখানো হয়েছে। বেশির ভাগ অভিভাবকই হতবাক! ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন তাঁদের অনেকে।
পর্ষদ সূত্রের খবর, উত্তরপত্র দেখার সময় কোনও খাতায় পরীক্ষকেরা যদি দেখেন, কোনও পরীক্ষার্থী অপ্রাসঙ্গিক কিছু লিখে রেখেছে বা ছবি এঁকেছে, তখন তিনি সেটা প্রধান পরীক্ষককে জানান। প্রধান পরীক্ষক সেই খাতা পাঠান আরএ কমিটির কাছে। সেই কমিটি ওই খাতা দেখে যদি মনে করে, অভিভাবকদের ডেকে দেখানো উচিত, তখন তাঁদের ডাকা হয়।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ ভাবে অভিভাবকদের ডেকে খাতা দেখানোর ঘটনা আগেও ঘটেছে। তবে এ বার পরীক্ষার খাতায় কয়েক জন যে-ভাবে আপত্তিকর শব্দ লিখেছে, তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। ১৫-১৬ বছরের পড়ুয়া এমন অশ্রাব্য গালিগালাজ কোথায় শিখল, সেই প্রশ্নও উঠছে।’’ অভিভাবকদের অনেকেই ছেলেমেয়েদের এমন কীর্তি দেখে ভেঙে পড়েছেন বলে খবর।
এক পর্ষদকর্তা বলেন, ‘‘কোনও পরীক্ষার্থী যদি ভেবে থাকে যে, লক্ষ লক্ষ খাতার মধ্যে তার একটি গালিগালাজ লেখা খাতা পর্ষদের নজরে পড়বে না, সেটা ভুল ভাবনা। খাতায় এই ভাষায় গালিগালাজ লিখে রাখলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর শুধু একটি পরীক্ষা নয়, সব পরীক্ষাই বাতিল হতে পারে। এমনকি এক নয়, একাধিক বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার অনুমতি না-ও মিলতে পারে।’’
শিক্ষা পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, অতিমারি-উত্তর পর্বে উপাচার্যের ঘরে ঢুকে কটু কথা বলা, অনলাইনে ‘ওপেন বুক’ বা বই খুলে পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন এবং উত্তরপত্রে কুকথা লেখা হয়তো পরস্পরবিচ্ছিন্ন প্রবণতা হয়। এই সব কিছুর মূলে একই দুঃসময়ের গরল ক্রিয়াশীল।
চিকিৎসক অনিরুদ্ধবাবুর মতে, আড়াল থেকে এমন অনেক কাজ আমরা করতে পারি, যা হয়তো প্রকাশ্যে কোনও দিনই করতে পারব না। তাঁর কথায়, “ওই ছোট ছোট পরীক্ষার্থীরা হয়তো ভাবছে, তারা আড়াল থেকে এগুলো লিখছে। তাই বেপরোয়া হয়ে যা খুশি লিখছে। কিন্তু ওদের এখনও এটা বোঝার মতো বুদ্ধি হয়নি যে, পরীক্ষার খাতায় কোনও আড়াল নেই। সেটা জানলে হয়তো খাতায় ওই ভাষা লিখে আসত না।’’