মনোজিৎ গোস্বামী, পানাগড় , সংবাদ ভাস্কর ডিজিটাল ডেস্ক :
রাজা নেই তাই রাজত্বও নেই, পরে আছে তৎকালীন তাহাদের তৈরী বেশ কিছু ভগ্নপ্রায় মন্দির।তবে পুজোর সময় জাঁকজমকেরও অভাব নেই এই সব মন্দির গুলিতে।তাই চিরাচরিত প্রথা মেনেই বছরের পর বছর ধরে অজয় নদীর লাগোয়া কাঁকসার বনকাটি গ্রামে আনুমানিক ৯৫০ বছর ধরে তান্ত্রিক মতে পূজিত হয়ে আসছে রায় পরিবারের শ্মশান কালী।পারিবারিক সূত্রে জানা যায় রাজা বল্লাল সেনের দীক্ষাগুরু মহেশ্বর প্রসাদ ব্যানার্জ্জী তান্ত্রিক মতে শুরু করেন শ্মশান কালির পূজা।

বনকাটির রায় পরিবার, রাজা বল্লাল সেনের কুলগুরু মহেশ্বর প্রাসাদের বংশধর।রাজা বল্লাল সেন বাংলাদেশে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে দীক্ষাগুরু তান্ত্রিক আচার্য্য মহেশ্বর প্রসাদ বন্দোপাধ্যায় কে সঙ্গে নিয়ে জল পথে নৌকা নিয়ে চলে আসেন বর্তমানে কাঁকসার গরজঙ্গলে।
সেই খানেই শুরু করেন রাজ্য পাঠ।কথিত আছে সেই সময় ঘন বন জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করে গ্রাম তৈরি করেন রাজা বল্লাল সেন, গ্রামের নাম রাখা হয় বনকাটি গ্রাম।এই বনকাটি গ্রাম ছিলো রাজা বল্লাল সেনের বাণিজ্যিক কেন্দ্র।এই এলাকা থেকেই অজয় নদীর মাধ্যমে লাক্ষা ও কাঠ কয়লা নিয়ে যাওয়া হতো কোলকাতায় এবং ওখান থেকে মশলা পাতি নিয়ে আসা হতো বিক্রির জন্য এই বনকাটিতে।

আনুমানিক ৯৫০ বছর পূর্বে রাজার কুলগুরু তান্ত্রিক আচার্য্য মহেশ্বর প্রসাদ বন্দোপাধ্যায় বনকাটি গ্রামেই সম্পুর্ন তান্ত্রিক মতে শ্মশান কালির পূজা শুরু করেন,জানালেন নব্বই বছর ছুঁই ছুঁই বর্তমানে রায় পরিবারের প্রবীণ সদস্য অনিল কুমার রায়।তিনি জানান সেই সময় নরবলি দেওয়ার প্রথা চালু থাকলেও বর্তমানে ছাগ, মেষ ও মহিষ বলি দেওয়া হয় পাশাপাশি নিবেদন করা হয় পরিবারের সদস্যের এক ফোঁটা রক্ত। পুজো শুরুর আগে বিবস্ত্র অবস্থায় শ্মশানে ক্রিয়াকর্ম করে গুরু পূজন করে নিঃশব্দে বাড়ী নিয়ে এসে পূজার কাজ শুরু করা হয়।সারারাত ধরে চলে পূজা পাঠ, হোম যজ্ঞ।এক হাজার আট টি বেলপাতা ও পাঁচ কেজি আড়াইশো গ্রাম ঘি লাগে এই যজ্ঞে।

মায়ের ভোগে থাকে সম্পুর্ন ঘরের তৈরি গুড়ের নারকেল নাড়ু এবং ঘরের তৈরি সর্ষের তেল দিয়ে রান্না করা হয় ভোগ।আমিষ ও নিরামিষ এই দুই ধরনের ই ভোগ করা হয় বলে জানান পরিবারের সদস্য লালু রায়।ভোগে থাকে লুচি, সুজি, ফল, মিষ্টি এবং আমিষে থাকে প্রথম বলি হওয়ার পাঁঠার মাংস মাছ। তিনি বলেন পুজো তে দুই দিন ধরে চলে নর নারায়ন সেবা।